
সড়ক দুর্ঘটনায় তিন জনকে হত্যা মামলার আসামি পলাশ কারাগারে, ছবি তুলতে পুলিশের বাধা
মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ২৫.০৫.২৫
মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কে দুর্ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তাসহ ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাজ্জাদ হোসেন পলাশকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২৫ মে) মেহেরপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: শাজাহান আলীর আদালতে আত্মসর্পণ করে জামিন আবদেন করে পলাশ। আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। পলাশ উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে ছিলেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি নিম্ম আদালতে আত্মসর্পণ করেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনার চার দিন পর গত ৪ এপ্রিল নিহত ব্যাংক কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান সোহাগের চাচা সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৯৮/১০৫ ধারায় মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা করেন। যার মামলা নম্বর—০৭।
আসামী সাজ্জাদ হোসেন পলাশ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াবাড়ীয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে। তিনি মেহেরপুর পশুহাট সংলগ্ন ভুট্টা ক্রয় কেন্দ্রে বিপি কর্পোরেশনের মালিক।
মামলায় আসামি পক্ষে এডভোকেট মারুফ আহমেদ বিজন ও এডভোকেট কামরুল হাসান আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন।
মামলার প্রধান আসামি সাজ্জাদ হোসেন পলাশকে নিরাপত্ত বেষ্টনির মধ্যেদিয়ে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হয়। এসময় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে গেলে পুলিশ পক্ষ থেকে বাঁধা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩১ মে রোযার ঈদের দিন বিকালে প্রাইভেট কার চালক পলাশ হোসেন বেপরোয়া গতিতে আমঝুপি থেকে মেহেরপুরের দিকে আসছিলেন। এসময় ভ্যানচালক আলী হাসান তার পরিবারের লোকজন নিয়ে ভ্যানযোগে আমঝুপির দিকে যাচ্ছিলেন। প্রাইভেট চালক প্রথমে পাখিভ্যানের সাথে সজোরে ধাক্কা মারলে ভ্যানের সকল যাত্রী রাস্তার উপর ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে প্রাইভেট কারটি মোটরাসাইকেলকেও ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেলের দুই আরোহী আক্তারুজ্জামান শোভন ও তার বন্ধু আল ইমরান রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে মারাত্বক আহত হন। খবর পেয়ে মেহেরপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স তাদেরকে উদ্ধার করে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিলে ব্যাংক কর্মকর্তা আখতারুজ্জামানকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আল ইমরানকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও জুবাইয়ের হাসানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। রাজশাহীতে নেওয়ার পথে সন্ধ্যার দিকে পাবনার মধ্যে শিশু জুবায়ের হোসেন মারা যান। আল ইমরান রাত ৯ টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে মারা যান।
এদিকে, দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে সেখানে দেখা যায়, যে তিনজন নিহত হয়েছে তারা সবাই তাদের সঠিক সাইডে ছিল এবং আসামী তার গাড়ী হইতে বাহির হয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। মামলার বাদীর অভিযোগ করে এজাহারে লিখেছেন আসামী পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করেছে।