মেহেরপুর শহরের ওয়াদাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০ লাখ টাকা মূল্যের হেরোইনসহ মা-ছেলেকে আটক করেছে সেনাবাহিনী ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। শনিবার (৫ জুলাই) সকালবেলা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানে ১৩০ গ্রাম হেরোইন, নগদ অর্থ এবং ডিজিটাল ওজন পরিমাপক যন্ত্র উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন শহরের মিয়াপাড়ার বাসিন্দা মৃত নুরুন্নবীর স্ত্রী শিখা খাতুন (৪৫) ও তার ছেলে জাহিদ (২৫)। অভিযানের সময় তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এসব মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারী নাথ বলেন, “গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে শিখা খাতুনের বাড়ি থেকে আনুমানিক ১০ লাখ টাকা মূল্যের ১৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। এছাড়া মাদক বিক্রির নগদ ৬২ হাজার ৮৩০ টাকা ও দুটি ডিজিটাল ওজন মাপার যন্ত্রও জব্দ করা হয়েছে।”
অভিযানে সহযোগিতা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল। তবে অভিযান চলাকালীন সময় মাদক কারবারের অন্যতম মূলহোতা নবী ওরফে নূর নবী (পিতা: লুৎফর রহমান), মিয়াপাড়ার বাসিন্দা, পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারী নাথ আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত মা-ছেলে হেরোইন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে মেহেরপুর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, শিখা খাতুন ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মাদকের ব্যবসার অভিযোগ থাকলেও আগে কখনও এভাবে হাতেনাতে ধরা পড়েনি। এলাকাবাসী মনে করেন, এ ধরনের অভিযান নিয়মিত চালানো হলে মেহেরপুরে মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, মেহেরপুর সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এ জেলাকে মাদক পাচারের জন্য ব্যবহার করে একটি চক্র। সীমান্ত এলাকা হওয়ায় এ জেলায় মাদকের বিস্তার বেশি। এই চক্রের মূল হোতাদের ধরতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, মাদকবিরোধী এ অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তাদের দাবি, শুধু অভিযান চালালেই হবে না, মাদক ব্যবসায়ীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই মাদকের করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পাবে যুবসমাজ।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির আওতায় এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।