মেহেরপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে প্রকাশ্যে এক আসামিকে অপহরণের চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মেহেরপুর জেলা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে একটার দিকে জামিনে মুক্তি পাওয়া আসামি নুরুজ্জামানকে টেনে-হিঁচড়ে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশি তৎপরতায় অপহরণকারীরা ধরা পড়ে।
আটককৃত অপহরণকারীরা হলো, গাংনী উপজেলার কাজিপুর গ্রামের লিটন হোসেন (৩৫), জোড়পুকুরিয়া গ্রামের মিঠুন আলী (৩২), জিয়ারুল ইসলাম (৪৫), রামদেবপুর গ্রামের পারভেজ মোস্তাক (৫১), আসাদুল ইসলাম (৪৫), কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তেকালা গ্রামের জিন্নাত হোসেন (৩২), সাপাত আলী (৫০), রাজ্জাক (৬৫), প্রাগপুর বীরগাছী গ্রামের শিপলু (৪৫) এবং মাইক্রোবাস চালক হোসেন আলী (২৫)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আদালত প্রাঙ্গণে হঠাৎ করে একদল ব্যক্তি নুরুজ্জামানকে ঘিরে ফেলে টানতে টানতে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে নিয়ে আসে এবং বেদম প্রহার করে। পরে তাকে জোর করে একটি মাইক্রোবাসে তোলে। এ সময় বাধা দিতে গেলে কয়েকজন স্থানীয়কেও মারধর করা হয়। ঘটনাটিতে আদালত চত্বরে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশ দ্রুত অভিযানে নামে। মেহেরপুর–কুষ্টিয়া সড়কের বাঁশবাড়িয়া এলাকায় পুলিশের তল্লাশিতে ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-৮২০০ নম্বরের একটি মাইক্রোবাস আটক করা হয়। ওই গাড়ি থেকে নুরুজ্জামানকে উদ্ধার করা হয় এবং অপহরণে জড়িত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তারা মেহেরপুর সদর থানা হেফাজতে রয়েছে।
অপহৃত নুরুজ্জামানের ভাই রাজু আহমেদ জানান, নুরুজ্জামান কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া গ্রামের মৃত আফজাল মালিথার ছেলে। তার বিরুদ্ধে গাংনী উপজেলার রামদেবপুর গ্রামের পারভেজ আশরাফ ২৭ লাখ টাকার আর্থিক লেনদেন নিয়ে মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, বিদেশ পাঠানোর প্রক্রিয়ায় অর্থ নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। এ ঘটনায় নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ এনে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪২০ ও ৫০৬ ধারায় মামলা করা হয়।
আদালত এক মাসের জামিন মঞ্জুর করলে বাদী পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং বাদী পারভেজ আশরাফ ও তার সহযোগীরা আদালত চত্বরেই তাকে অপহরণের চেষ্টা চালায়।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি মেজবাহ উদ্দিন বলেন, 'খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাঁশবাড়িয়া এলাকা থেকে মাইক্রোবাসসহ অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে। নুরুজ্জামানকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং নতুন করে একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।'