
মেহেরপুরে আলোচিত একটি ধর্ষণ মামলায় স্বপন আলী নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে মেহেরপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তোহিদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়, জরিমানার অর্থ অনাদায়ে স্বপন আলীকে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত স্বপন আলীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আসামি স্বপন আলী মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার মোহাম্মদপুর কেলাপাড়া গ্রামের মৃত এনামুল হকের ছেলে।
মামলার নথি ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার রাহাতুল ইসলামের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল স্বপনের। সেই সম্পর্কের সূত্র ধরে ২০১৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বিয়ের প্রলোভনে প্রেমিকাকে গাংনীতে ডেকে নেয় স্বপন।
সারাদিন ঘোরাফেরার পর রাতে তারা আশ্রয় নেয় গাংনীর আকুবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের নির্মাণাধীন ভবনের দ্বিতীয় তলায়। সেখানেই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে মেয়েটির মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় স্বপন।
পরদিন স্থানীয়দের সহায়তায় ভুক্তভোগী মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মেয়েটির বাবা রাহাতুল ইসলাম ২২ সেপ্টেম্বর গাংনী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলায় স্বপন আলী ও শাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও তদন্তে শাহারুলের নাম বাদ দেওয়া হয়।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ায় ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত স্বপন আলীকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় দেন।
আদালতে পড়ে শোনানো রায়ে বিচারক বলেন, ভিকটিম ছিল প্রতারণার শিকার। আসামি তার বিশ্বাসের অপব্যবহার করে গুরুতর অপরাধ করেছে। সমাজে এ ধরনের অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রয়োজন। এ সময় তিনি আরো বলেন ভুক্তভোগীর পিতা সাক্ষ্য প্রদানকালে আসামির বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নেই বলাতে আদালত বিস্মিত হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর এ এস এম সাইদুর রাজ্জাক টোটন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আশরার জাহান বলেন, ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ রায়ের মাধ্যমে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধে জড়িতদের জন্য কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। তারা ন্যায়বিচারে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।