ঢাকা , সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ :
হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের পরও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মেহেরপুরে বিএনপির গণসংযোগ ও পথসভা মেহেরপুরে সূর্য ক্লাবের উদ্বোধন উপলক্ষে অনুষ্ঠানঃ গান গাইবেন জেমস মেহেরপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারঃ হত্যার অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে মেহেরপুরে র‍্যাব কনস্টেবলের বিরুদ্ধে একের পর এক ভয়াবহ অভিযোগ মেহেরপুরে জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন মেহেরপুরে সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু রাজধানীর ওয়ারীতে ২৬ কেজি গাঁজা উদ্ধারঃ আটক ১ আদালত চত্বরে নাটকীয় ভাবে আসামি অপহরণের চেষ্টাঃ ১০ জন গ্রেপ্তার মেহেরপুরে এনসিপি’র দোয়া মাহফিল মেহেরপুরের সাবেক এসপি নাহিদ গ্রেপ্তার
বিজ্ঞপ্তি :
শীঘ্রই শুভ উদ্বোধন হতে যাচ্ছে মেহেরপুর নিউজ এর  বস্তুনিষ্ঠ তথ্যে, চারপাশের খবর" নিয়ে শীঘ্রই আসছে মেহেরপুর নিউজ অনুসন্ধানী সংবাদ
মেহেরপুরে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় প্রশ্নের ঝড়

সরকারি স্কুলগুলোতে চরম ফল বিপর্যয়

মেহেরপুরে এসএসসি পরীক্ষায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ফলাফলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। জেলার নামকরা চারটি সরকারি স্কুলে ফেল ও জিপিএ-৫ এর হতাশাজনক চিত্রে অভিভাবকদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ২৬১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে ৫৩ জন। পাশ করেছে ২০৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩৯ জন। পাশের হার ৭৯.৬৯ শতাংশ, অকৃতকার্য ২০.৩১ শতাংশ।
মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়েও চিত্রটা ভিন্ন নয়। ২৭০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ২২১ জন। ফেল করেছে ৪৯ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬০ জন। পাশের হার ৮১.৮৩ শতাংশ। অকৃতকার্য ১৮.১৭ শতাংশ।
গাংনী সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ৬১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে ২৮ জন। পাশ করেছে মাত্র ৩৩ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ২ জন। পাশের হার মাত্র ৫৪.১০ শতাংশ, অকৃতকার্য ৪৫.৯০ শতাংশ— যা জেলা জুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে।
মুজিবনগর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফলাফলেও সন্তোষ নেই। ৮৭ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৭৩ জন। ফেল করেছে ১৪ জন। জিপিএ-৫ মাত্র ৭ জন। পাশের হার ৮৩.৯১ শতাংশ, অকৃতকার্য ১৬.০৯ শতাংশ।
অন্যদিকে জেলার শীর্ষ ফলাফল এবারও ধরে রেখেছে একাধিক প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জিপিএ-৫, পাশের হার ও একাডেমিক প্রস্তুতিতে প্রাইভেট স্কুলগুলো যেভাবে এগিয়ে, সেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানের এমন ভাটার টান শিক্ষাব্যবস্থার নৈতিক পতনেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা এবং একজন অভিভাবক মোঃ আওয়াল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকারি স্কুলে ক্লাস চলে না, শিক্ষকরা কোচিংয়ে বেশি মনোযোগী। ছাত্রদের পড়াশোনার দিকে নজর নেই বললেই চলে। এই ফলাফল আমাদের দীর্ঘদিনের আশঙ্কাকেই সত্যি করল।’
এ ব্যাপারে একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হযরত আলী বলেন, ‘আমার কাছে এখনও সম্পূর্ণ তথ্য নেই। সব স্কুলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রোববার বিস্তারিত জানাতে পারব।’
শিক্ষাবিদদের মতে, এখনই জবাবদিহিতা, শিক্ষক মূল্যায়ন এবং একাডেমিক কার্যক্রমে সংস্কার আনা না হলে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কেবল নামেই টিকে থাকবে। ফল বিপর্যয় আসলে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনারই বহিঃপ্রকাশ। তদন্ত, জবাবদিহি এবং কাঠামোগত সংস্কারে এখন আর বিলম্ব করার সুযোগ নেই। নইলে শিক্ষার ভরসাস্থল হিসেবে সরকারি বিদ্যালয়গুলো পুরোপুরি মুখ থুবড়ে পড়বে, এমন আশঙ্কাই এখন প্রবল।

অনুগ্রহ করে আপনার মতামত আমাদের পাঠান

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের পরও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

মেহেরপুরে বিএনপির গণসংযোগ ও পথসভা

মেহেরপুরে সরকারি শিক্ষাব্যবস্থায় প্রশ্নের ঝড়

সরকারি স্কুলগুলোতে চরম ফল বিপর্যয়

আপলোডের সময় : ০১:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
মেহেরপুরে এসএসসি পরীক্ষায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ফলাফলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। জেলার নামকরা চারটি সরকারি স্কুলে ফেল ও জিপিএ-৫ এর হতাশাজনক চিত্রে অভিভাবকদের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ২৬১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে ৫৩ জন। পাশ করেছে ২০৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ৩৯ জন। পাশের হার ৭৯.৬৯ শতাংশ, অকৃতকার্য ২০.৩১ শতাংশ।
মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়েও চিত্রটা ভিন্ন নয়। ২৭০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ২২১ জন। ফেল করেছে ৪৯ জন, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬০ জন। পাশের হার ৮১.৮৩ শতাংশ। অকৃতকার্য ১৮.১৭ শতাংশ।
গাংনী সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ৬১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে ২৮ জন। পাশ করেছে মাত্র ৩৩ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ২ জন। পাশের হার মাত্র ৫৪.১০ শতাংশ, অকৃতকার্য ৪৫.৯০ শতাংশ— যা জেলা জুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে।
মুজিবনগর সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফলাফলেও সন্তোষ নেই। ৮৭ জনের মধ্যে পাশ করেছে ৭৩ জন। ফেল করেছে ১৪ জন। জিপিএ-৫ মাত্র ৭ জন। পাশের হার ৮৩.৯১ শতাংশ, অকৃতকার্য ১৬.০৯ শতাংশ।
অন্যদিকে জেলার শীর্ষ ফলাফল এবারও ধরে রেখেছে একাধিক প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জিপিএ-৫, পাশের হার ও একাডেমিক প্রস্তুতিতে প্রাইভেট স্কুলগুলো যেভাবে এগিয়ে, সেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানের এমন ভাটার টান শিক্ষাব্যবস্থার নৈতিক পতনেরই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা এবং একজন অভিভাবক মোঃ আওয়াল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকারি স্কুলে ক্লাস চলে না, শিক্ষকরা কোচিংয়ে বেশি মনোযোগী। ছাত্রদের পড়াশোনার দিকে নজর নেই বললেই চলে। এই ফলাফল আমাদের দীর্ঘদিনের আশঙ্কাকেই সত্যি করল।’
এ ব্যাপারে একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কেউ ফোন ধরেননি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হযরত আলী বলেন, ‘আমার কাছে এখনও সম্পূর্ণ তথ্য নেই। সব স্কুলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। রোববার বিস্তারিত জানাতে পারব।’
শিক্ষাবিদদের মতে, এখনই জবাবদিহিতা, শিক্ষক মূল্যায়ন এবং একাডেমিক কার্যক্রমে সংস্কার আনা না হলে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো কেবল নামেই টিকে থাকবে। ফল বিপর্যয় আসলে দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনারই বহিঃপ্রকাশ। তদন্ত, জবাবদিহি এবং কাঠামোগত সংস্কারে এখন আর বিলম্ব করার সুযোগ নেই। নইলে শিক্ষার ভরসাস্থল হিসেবে সরকারি বিদ্যালয়গুলো পুরোপুরি মুখ থুবড়ে পড়বে, এমন আশঙ্কাই এখন প্রবল।